৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দৈনিক পত্রিকা প্রকাশে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, অনলাইন পোর্টালকেও তাই করতে হবে: কামাল আহমেদ
দৈনিক পত্রিকা প্রকাশে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, অনলাইন পোর্টালকেও তাই করতে হবে: কামাল আহমেদ

অনলাইন সংবাদমাধ্যমের ক্ষেত্রে ‘নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি’ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ।   বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আলোচনা অনুষ্ঠান ইনসাইড আউটে তিনি বলেন, “এদের মধ্যে কয় ডজন অনলাইন পোর্টালের সংবাদমাধ্যম হিসাবে কাজ করার যোগ্যতা, সামর্থ্য, দক্ষতা আছে? আমরা বলেছি, অনলাইন পোর্টালকে আপনি যদি গণমাধ্যম হিসাবে নিবন্ধন দিতে চান, তাহলে এখানে একটা পূর্বশর্ত নির্ধারণ করা দরকার।   “প্রকাশকের পূর্ব যোগ্যতা নির্ধারণ করা দরকার। সেটা হচ্ছে, একটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশের জন্য যেই বার্তাকক্ষের দরকার হয়, যে ধরনের শর্তগুলো পূরণ করতে হয়, ঠিক একই ধরনের শর্তপূরণ সাপেক্ষেই আপনি একটি অনলাইন পোর্টালকে গণমাধ্যমের স্বীকৃতি দিতে পারেন।”   ইতোমধ্যে যাদের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এই শর্তগুলো পর্যালোচনার সুপারিশ করেন কামাল আহমেদ।

সরকারি বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের তালিকাভুক্তি জালিয়াতিপূর্ণ: কামাল আহমেদ
সরকারি বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের তালিকাভুক্তি জালিয়াতিপূর্ণ: কামাল আহমেদ

সরকারি বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের যে তালিকাভুক্তি, তাকে ‘জালিয়াতিপূর্ণ’ বলছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ।   বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আলোচনা অনুষ্ঠান ইনসাইড আউটে তিনি বলেন, “এই যে মিডিয়া লিস্টিং, সেটা ত্রুটিপূর্ণ এবং জালিয়াতিপূর্ণ। আমরা দেখেছি হিসাব করে যে, সরকারের বিজ্ঞাপন পাওয়ার জন্য মিডিয়া তালিকাভুক্ত করতে হয় এবং মিডিয়া তালিকাভুক্ত করেছে সে কারণে ছয়শর উপরে পত্রিকা শুধুমাত্র ঢাকা শহরে। সারা দেশের সংখ্যা আরও অনেক বেশি, সাড়ে তিন হাজারের মত বোধহয়।   “ঢাকা শহরে যে ছয়শর বেশি পত্রিকা, এই পত্রিকাগুলোর ঘোষিত প্রচার সংখ্যার যোগফল দিয়ে আমরা দেখেছি, দেড় কোটির উপরে, এক কোটি ৫১ লাখ পত্রিকা দৈনিক প্রকাশিত হয়ে সার্কুলেশনে আছে, বা বিতরণ হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে কি তা হচ্ছে? যদি সেটা বাস্তব হত, তাহলে প্রতি ঘরে, এমনকি বাচ্চাদের নামেও একটা পত্রিকা প্রতিদিন কিনতে হত।”

শেয়ারবাজারে গণমাধ্যমের তালিকাভুক্তি জবাবদিহি নিশ্চিত করবে: কামাল আহমেদ
শেয়ারবাজারে গণমাধ্যমের তালিকাভুক্তি জবাবদিহি নিশ্চিত করবে: কামাল আহমেদ

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেছেন, সংবাদমাধ্যমের মালিকদেরও এক ধরনের জবাবদিহির ব্যবস্থা থাকা দরকার, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা দরকার। আর সেজন্য শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি একটি ভালো সমাধান হতে পারে।     বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আলোচনা অনুষ্ঠান ইনসাইড আউটে তিনি বলেছেন, “শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হলে প্রতিবছর আপনাকে নিরীক্ষাকৃত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে, আপনাকে শেয়ারহোল্ডারদের বার্ষিক সাধারণ সভা করতে হবে। সেখানে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহি করতে হবে যে, তার নীতি ঠিক ছিল, কি ভুল ছিল। “তারা সরকারের লেজুড়বৃত্তি করেছেন, বিরোধীদলকে ক্ষুব্ধ করেছেন; অথবা বিরোধীদলের দালালি করেছেন, সরকারকে ক্ষুব্ধ করেছেন… ভারসাম্যপূর্ণ, পেশাদারত্বের অভাব ছিল কি-না- এগুলোর সবগুলোর জবাবদিহি কিন্তু ওখানে করতে হয়।”

রাজনৈতিক দলের সাথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার জন্যই সম্পাদকীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন: কামাল আহমেদ
রাজনৈতিক দলের সাথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার জন্যই সম্পাদকীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন: কামাল আহমেদ

জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আসা অন্তর্বর্তী সরকারের পর যে সরকার ক্ষমতায় আসতে পারে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই গণমাধ্যম মালিকরা সম্পাদকীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন এনেছেন বলে মন্তব্য করেছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ।   বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আলোচনা অনুষ্ঠান ইনসাইড আউটে তিনি বলেছেন, “যখনই সরকার পরিবর্তন হয়, তখনই বার্তাকক্ষগুলোতে নেতৃত্বের পরিবর্তন আমরা দেখেছি। কারণ, এই পরিবর্তনগুলো হয় রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের সাথে এক ধরনের সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা থেকে।   “এবং সেই চেষ্টাটা কে করেন? কার নির্দেশে হয়? কার উদ্যোগে হয়? প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের উদ্যোগে। গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকটির মালিকদের একেকটি স্বার্থ আছে। এবং তারা সেই স্বার্থ থেকে রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এক ধরনের সম্পর্ক গড়ে তুলতে চান, লিয়াজোঁ প্রতিষ্ঠা করতে চান। এবং সেই লিয়াজোঁ প্রতিষ্ঠা করার জন্য ওই দলের নেতাদের সাথে কার সম্পর্ক ভালো, তাকে আমাদের বার্তাকক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়।”

‘মবের হুমকির’ কারণে সংবাদকর্মীদের মধ্যে ভয়, অস্বস্তি, অনিশ্চয়তার দোলাচল রয়েছে: কামাল আহমেদ
‘মবের হুমকির’ কারণে সংবাদকর্মীদের মধ্যে ভয়, অস্বস্তি, অনিশ্চয়তার দোলাচল রয়েছে: কামাল আহমেদ

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেছেন, ‘মবের হুমকির’ কারণে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলো এক ধরনের সংশয়ে আছে; ফিরে এসেছে ‘সেল্ফ সেন্সরশিপ’। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আলোচনা অনুষ্ঠান ইনসাইড আউটে তিনি বলেন, “এখনও পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের ওপরে এক ধরনের সেল্ফ সেন্সরশিপ, এটা রয়েছে। এবং এই সেল্ফ সেন্সরশিপের পেছনের কারণটা হচ্ছে যে, মানুষের মধ্যে, সংবাদকর্মীদের মধ্যে একটা ভয়, একটা অস্বস্তি, একটা অনিশ্চয়তার দোলাচল রয়েছে। “এই ভয়টা প্রধানত যেটা আসছে, সেটা হচ্ছে যে, হুমকি। শারীরিক লাঞ্ছনার হুমকি, পত্রিকা অফিসের সামনে কিংবা গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের সামনে হঠাৎ করে মব তৈরি হওয়ার হুমকি, সেই মব এসে এখানে জেয়াফতের মতো কাণ্ড করেছে। সেই মব এসে সেখানে বিক্ষোভ করেছে।” তিনি বলেন, “এ ধরনের হুমকি থেকেই কিন্তু আসলে ওই সেল্ফ সেন্সরশিপের ঘটনাটা আবার ফিরে আসছে।” গণমাধ্যমকর্মীদের আর্থিক স্বাধীনতা, চাকরির নিশ্চয়তা, বানোয়াট অভিযোগে হেনস্তা, সম্পাদকীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন, গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের মালিকানা, ওয়ান হাউজ ওয়ান মিডিয়া, শেয়ারবাজারে গণমাধ্যমের তালিকাভুক্তি, সরকারি বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে সংবাদপত্রের তালিকাভুক্তিতে দুর্নীতি, অনলাইন সংবাদপত্রে নৈরাজ্য, ভৌতিক টিআরপিসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন কামাল আহসেদ।