Published : 29 May 2025, 12:11 AM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে এল জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রী সংগঠন ‘ইসলামী ছাত্রীসংস্থা’।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নারীদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বুধবার বিকালে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খানের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে প্রকাশ্যে এসেছে সংগঠনটি।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের অক্টোবরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির সামনে আসে। তখন সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্বের নাম প্রকাশ পায়।
এর সাত মাস পর ইসলামী ছাত্রীসংস্থাও প্রকাশ্যে এল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীসংস্থার সভানেত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী সাবিকুন্নাহার তামান্না। তিনি কবি সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
আর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন মোছা. আফসানা আক্তার। তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্রী। থাকেন বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলে। তামান্না ও আফসান দুজনেই ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী।
সাবিকুন্নাহার তামান্না বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নির্যাতন নিপীড়নের কারণে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। ৫ অগাস্ট পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশনার আলোকে ক্যাম্পাসে আমরা কাজ শুরু করার চেষ্টা করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, এই সময়ের মাঝে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীসংস্থার প্রাথমিক কাঠামো গঠন সম্ভব হয়েছে।
“বর্তমানে শাখা সভানেত্রী ও সেক্রেটারির দায়িত্ব প্রদানের মাধ্যমে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইনশাআল্লাহ আমরা দ্রুত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চালু করব।”
সেক্রেটারি আফসানা আক্তার বলেন, “বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহৎ ছাত্রী সংগঠন। ১৯৭৮ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আমাদের সংগঠন ছাত্রীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রীসংস্থার কার্যক্রমের রয়েছে বিরাট ইতিহাস। অতীতে ছাত্রীসংস্থা ডাকসুতেও অংশগ্রহণ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের জন্য কাজ করেছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমরা সবচেয়ে বড় ভিক্টিম ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, আজকের এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা নতুন পরিসরে কাজ শুরু করেছি।”
আফসানা বলেন, “আমরা আশা করছি, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও সম্মানজনক পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে ঢাবি প্রাশাসন দ্রুততম সময়ের মাঝে কার্যকরী ব্যবস্থা নেবেন ইনশাআল্লাহ। নারী শিক্ষার্থীদের অধিকার ও কল্যাণের জন্য বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা অতীতে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছে। সামনের দিনগুলোতেও নারীদের ন্যায্য দাবী ও অধিকার আদায়ে এই ভূমিকা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে ছাত্রীসংস্থার দেওয়া স্মারকলিপিতে ক্যাম্পাসের নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা জোরদার করা, পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের সহজলভ্যতা, নারী শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত কমনরুম, নামাজরুম ও ওযু খানার ব্যবস্থা করা, মাতৃত্বকালীন সময়ে সহযোগিতার ব্যবস্থা, আবাসন সংকট নিরসন, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জরুরি প্রয়োজনে হলে প্রবেশের অনুমতি, যৌন হয়রানি মুক্ত ক্যাম্পাস, হলভিত্তিক মেডিসিনের ব্যবস্থাসহ বেশকিছু দাবি তুলে ধরা হয়েছে।